হরিণ মেরে ভুরিভোজ করার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নোটাবেঁকী টহল ফাঁিড়র (অভয়ারণ্য কেন্দ্র) প্রধান কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাহারাম হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সাথে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে টহলের দায়িত্বে থাকা অপর তিনজনকে বিভিন্ন স্থানে বদলী করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর ভুরিভোজের এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ১ মার্চ। এ ঘটনায় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে বিভাগীয় বন সংরক্ষক (ডিএফও) এর দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, গত ১ মার্চ বহিরাগত কয়েকজন মেহমান পশ্চিম সুন্দরবনের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত নোটাবেঁকী অভয়ারণ্য কেন্দ্রে বেড়াতে যান। একই কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল বাহারাম এর পরিচিত ও নিকটাত্মীয় এসব মেহমানদের আতিথেয়তা করতে ঐ অভয়ারণ্য এলাকা থেকে হরিণ শিকার করে খাওয়ানো হয়। বিষয়টি একই কেন্দ্রে বোটম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ফজলুল হক তার মোবাইলে গোপনে ধারণ করে বিভাগীয় বন সংরক্ষকের দপ্তরে পৌঁছে দেন।
তথ্য মতে, আব্দুল্লাহ আল বাহারাম এর নেতৃত্বে রাসেল মিয়া, কালু মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, বাদশা মিয়া, চন্দন কৈরী এবং ফজলুল হক পশ্চিম সুন্দরবনের নোটাবেঁকী অভয়ারণ্য এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
আব্দুর রাজ্জাকসহ দুইজন প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কাজে বাইরে থাকার সুযোগে অন্যরা নিজেদের সুরক্ষার কাজে ব্যবহৃত বন্দুক দিয়ে হরিণটি শিকার করে।
তবে, অভয়ারণ্য কেন্দ্র প্রধান ছাড়া অন্য কারও বিরুদ্ধে কঠোর কোন ব্যবস্থা না নেয়াতে বনকর্মীদের অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর বিভাগীয় বন সংরক্ষকের নির্দেশে সাতক্ষীরা রেঞ্জের এসিএফ এর নেতৃত্বে তিনটি স্টেশন অফিসারের সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিভাগীয় বন সংরক্ষকের কাছে পাঠানো হয়েছে। অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ইনচার্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের অন্যান্য স্টেশনে বদলী করা হয়েছে।
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল্লাহ আল বাহারাম বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। বরং আমি অসুস্থ হয়ে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফেরার পর আজগুবি এসব অভিযোগ তুলে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বনকর্মীদের মধ্যে দলাদলির কারণে তাকে বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও দাবি তার।