
বামনা মহিলা কলেজের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
বরগুনার বামনা বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা ও
কর্মচারীদের কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
রবিবার(২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহাসিন কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও
দুর্নীতির অভিযোগ করেন কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার জায়গাম আহসান।
এর আগে শনিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টায় কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার জায়গাম আহসানের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত এবং
কর্মচারীদের কানধরে উঠবস করানোর অভিযোগের সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকসিশ) বরগুনা জেলা কমিটি।
সাংবাদিক সম্মেলনে কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার জায়গাম আহসান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,
কলেজের নিজস্ব আয়,
ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি ফি,
পরীক্ষার ফরম পূরণের ফি,
প্রবেশপত্র ও
প্রসংসাপত্র প্রদানে নির্ধারিত টাকার চেয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহাসিন কবির।
এসব টাকা কলেজের ব্যাংক একাউন্টে জমা না করে তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি লেমুয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল করিম তিনি লিখিত বক্তব্য বলেন,
বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার জায়গাম আহসান নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে কলেজ চালাচ্ছেন।
ইচ্ছেমতো কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরীচ্যুত করেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আশ্রাফুল হাসানকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত ও অফিস সহায়ক উজ্জল হাসানকে চাকরীচ্যুত করার জন্য অধ্যক্ষকে নোটিশে উল্লেখ করে সভা ডাকার জন্য বলেন।
অধ্যক্ষ মহসীন কবির বিধি বহির্ভূতভাবে এজন্ডা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সভাপতি শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করে কলেজ থেকে বের করে দেন।
পরে নাসিমা বেগম নামে সহকারি অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে বলেন। নাসিমা বেগম অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি।
বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহসীন কবির জানিয়েছেন, তিনি সভাপতির অবৈধ কর্মকান্ডের অংশীদার হতে চাননা। তাই তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে।
আগেও একবার মহসীন কবিরকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সাগরিকা কর্মকারকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো।
সংবাদ সম্মেলনে অফিস সহায়ক রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডাকে যেতে দেরী হওয়ায় তাকে শারিরিক লাঞ্ছনাসহ ৫০ বার কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে।
শিক্ষক-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, তাদের একটাই দাবী।
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার যায়গাম আহসানকে অপসারন না করা পর্যন্ত তারা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাবেননা।
কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ বজলুল গাফফার জায়গাম আহসান বলেন,
তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন,
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে।
অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহাসিন কবির বলেন,
তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
তিনি বলেন আমার ও কর্মচারীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে।