”মনে পড়ে বিখ্যাত সেই কবিতা? ঐ খানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে, তিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।”
গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনচিত্র, আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি, গল্প-উপন্যাস ছাড়াও জারি ও মুর্শিদিগানের বিশাল সংগ্রহের মাধ্যমে যিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি আর কেউ নন গণমানুষের প্রাণের কবি পল্লীকবি জসীম উদ্দীন।১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুরের তাম্বুলখানা গ্রামে জন্ম নেয়া কবির লেখনীতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পাঠকরা বুঝতে পারেন, গ্রাম বাংলার চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিলেন কবি জসীম উদ্দীন।
বাংলা সাহিত্য নিয়ে কবির চাওয়া-পাওয়া কিংবা মান-অভিমান নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন জার্মানিতে বসবাসরত কবির ছেলে গবেষক, ভূতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. জামাল আনোয়ার।জামাল আনোয়ার বলেন, কবিকে এখন পর্যন্ত সত্যিকারের মূল্যায়ন করা হয়নি। অত্যন্ত দুঃখজনক যে, তার জন্য যে জাদুঘর তৈরি হলো সেখানেও তার স্থান, তার জিনিসপত্র রক্ষা করার কোনো মূল্যায়ন হয়নি।
পল্লীকবির ছেলে আরো জানান, ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ীর গবেষণা সহকারী পদে বেশ কিছুদিন কাজ করেন কবি জসীম উদ্দীন। সেই দীনেশচন্দ্র সেনের সঙ্গেই বাংলা লোকসাহিত্য সংগ্রাহক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। প্রায় দশ হাজারেরও বেশি লোকসংগীত সংগ্রহ করেছিলেন গ্রাম বাংলার এই শ্রেষ্ঠ কবি।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, আজকে বাংলাদেশে জনগণ কবির বই-পুস্তক সংগ্রহ করুক, তাকে মূল্যায়ন করুক। তাকে যদি মূল্যায়ন না করা তাহলে বাংলাদেশের কোনো মূল্যায়ন হবে না।’
পল্লীকবি জসীম উদ্দীন ১৯৭৬ সালে একুশে পদক এবং ১৯৭৮ সালে পান মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার। বাংলা সাহিত্যের উৎকর্ষতার জন্য কবির সব রচনাসমূহ স্বপ্রণোদিত হয়ে সংরক্ষণের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র-এমনটাই প্রত্যাশা কবির পরিবারের সদস্যদের।