আন্তর্জাতিক

চীন ও ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষ, দু দেশের কমপক্ষে, ৬০ সেনা, হতাহত।

আন্তর্জাতিক ডেস্,
চীনেরও ৪৩ সৈন্য হতাহত: দাবি ভারতের
লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনাবাহিনীর সংঘাতে দুই দেশের কমপক্ষে ৬০ জন সেনা অফিসার ও জওয়ান হতাহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ভারতের দাবি এদের মধ্যে ৪৩ জনই চীনা সৈন্য। তবে এদের মধ্যে কতজন আহত বা নিহত হয়েছে তা কোনো পক্ষই নিশ্চিত করে নি।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে এ হামলায় ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৫ জুন) রাতে হামলার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাতে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন ওই সীমান্ত সংঘাতে। সরকারি সূত্রের মতে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে।

ভারতীয় বাহিনীর প্রত্যাঘাতে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনা জওয়ানদের হতাহতের সংখ্যা তুলনায় এখনও পর্যন্ত বেশি। পিএলএ’র অন্তত ৪৩ জন সৈনিক হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সেনা গোয়েন্দারা বেতারে আড়ি পেতে জানতে পেরেছে।
এর আগে, ১৯৭৫ সালে ভারত-চীন সীমান্তে শেষবার কোনও সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর থেকে ওয়েস্টার্ন সেক্টরে লাদাখে বা ইস্টার্ন সেক্টরে অরুণাচলে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি কম হয়নি। কিন্তু এ ধরনের প্রাণঘাতী মারামারি কখনও হয়নি। অবাক করার বিষয়; এই সংঘাতে কোনও পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। লোহার রড, লাঠি, পাথর নিয়ে হামলা করেছে চীনা সেনা। তারপরই প্রত্যাঘাত করেছে ভারতীয় সেনারা।
উল্লেখ্য, ভারত ও চীনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ দুটি বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে ভারী অস্ত্র মজুত করেছে। পূর্ব লাদাখের সীমান্ত অঞ্চলে ধীরে ধীরে এসব অস্ত্র নিয়েছে দুই দেশ। ভারী অস্ত্রের মধ্যে কামান এবং যুদ্ধের গাড়িও রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ বিরাজ করায় এসব অস্ত্রের মজুত করা হয়েছে।
কিছুদিন আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, চীন সেনাবাহিনী সীমান্তের যে এলাকায় রয়েছে সেখান থেকে ভারতের অংশে ঢুকতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা লাগবে। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের বিভিন্ন জায়গায় ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াচ্ছে চীনা বাহিনী।
ভারতীয় সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়, চীনের সেনাবাহিনী লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের কাছের ঘাঁটিগুলিতে নানান যুদ্ধের গাড়ি ও ভারী যুদ্ধের সঞ্জাম নিয়ে এসেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ভারতও আর্টিলারের মতো অস্ত্র ওই এলাকায় পাঠিয়েছে।
এদিকে ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোদস্তুর বিমানঘাঁটি গড়ে তুলছে চীন। তাদের ঘাঁটিতে জে-১১ বা জে-১৬ যুদ্ধ বিমানও রয়েছে। গত ২৬ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর দেয়।
খবরে বলা হয়, লাদাখে প্যাংগং লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় দশ বছর আগেই একটি বিমানবন্দর বানিয়েছে চীন। বেইজিং তখন জানিয়েছিল, অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্যই ওই বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে।
কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, গত এক মাসে ওই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ রাতারাতি বেড়ে গেছে। এবং সেখানে রীতিমতো একটি বিমানঘাঁটি তথা এয়ারবেস বানিয়ে ফেলেছে চীন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, সেখানে যুদ্ধবিমানও দাঁড় করিয়ে রেখেছে চীনের বিমানবাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

এড ব্লক এল্যার্ট

আমাদের সাইটি ভিজিট করতে দয়া করে আপনার ব্রাউজারের এড ব্লক এক্টেনশনটি বন্ধ করুন।