আন্তর্জাতিকস্বাস্থ

নিজেদের করোনা মুক্ত দাবি করে বিধি নিষেধ তুলে নিলো নিউজিল্যান্ড।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
করোনা ভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। ব্যতিক্রম নিউজিল্যান্ড। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আর্ডের্ন জানান, দেশটিতে নতুন কোনো কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত না হওয়ায় এবং সক্রিয় রোগী না থাকায় সব বিধিনিষেধ শিথিল করবে সরকার। তবে সীমান্তে বিধিনিষেধ জারি থাকবে।
সোমবার (৮ জুন) সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানায়।
ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে জেসিন্দা বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। ভাইরাস মোকাবিলায় অভূতপূর্বভাবে একতাবদ্ধ হয়েছিল নিউজিল্যান্ড।

শুরু থেকেই ভাইরাস মোকাবিলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নিউজিল্যান্ড। এ জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে প্রশংসিতও হয়েছেন তিনি।

২৫ মার্চ চার সপ্তাহের জন্য দেশ লকডাউন ঘোষণা করেন জেসিন্দা। এসময় নিউজিল্যান্ডের সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়।

জেসিন্দা বলেন, ‘সোমবার মধ্যরাত থেকে নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা এমন দেশে বসবাস করবে, যেখানে বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও জীবন যতটা সম্ভব স্বাভাবিক মনে হয়। শারীরিক দূরত্বের নিয়ম এবং সীমিত জনসমাবেশের বিধি বর্জন করা হবে। অর্থনীতির যেসব কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে, তা চালু হবে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেসিন্দা। নিউজিল্যান্ডের শেষ সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীটিও সুস্থ হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর কেমন অনুভূতি হয়েছে জানতে চাইলে জেসিন্দা বলেন, ‘আমি আমার শিশুকন্যার সঙ্গে একটু নেচেছি।’

সোমবার মধ্যরাত থেকে বিধিনিষেধহীন দেশে থাকার অপেক্ষায় রয়েছে নিউজিল্যান্ডবাসী। তারা আবারও একসঙ্গে খেতে এবং গণপরিবহনে পাশপাশি বসতে পারবে।

মাত্র দুই শতাধিক কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পরই নিউজিল্যান্ড লকডাউন করা হয়। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ হাজার ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২২ জন। এছাড়া বাকি সবাই সুস্থ হয়েছেন। বিধিনিষেধ আরোপ করা না হলে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

গুগলের তথ্য অনুযায়ী, লকডাউনে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় নিউজিল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ বাড়িতেই অবস্থান করেছেন।

নিউজিল্যান্ডের ৫০ লাখ মানুষ নিজেকে এবং একে অপরকে নিরাপদ রাখার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন বলে মন্তব্য করেন জেসিন্দা।

এদিকে বিশ্বজুড়ে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৭০ লাখ ১৬ হাজার ৭৯৪। বিভিন্ন দেশের সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ তথ্য জানায় জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ লাখ ২ হাজার ৮৭৪ জন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৩৬৩ এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৫১৪ জন। লক্ষাধিক শনাক্ত রোগী রয়েছে, এমন দেশের সংখ্যা ১৫।

এ পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে নিউজিল্যান্ড সীমান্তে আরোপিত বিধিনিষেধ এখনো বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন জেসিন্দা। বর্তমানে শুধু নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী এবং তাদের পরিবার দেশটিতে প্রবেশ করতে পারে। এরপর সরকারি ব্যবস্থায় তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক।

এক হাজারের বেশি শনাক্ত রোগীর দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডই প্রথম নিজেদের করোনা ভাইরাসমুক্ত ঘোষণা করেছে। এর আগে ৯ মে ফারো আইল্যান্ডস, ২৫ মে ইউরোপের দেশ মন্টেনিগ্রো এবং ৫ জুন ফিজি নিজেদের করোনা ভাইরাসমুক্ত ঘোষণা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

এড ব্লক এল্যার্ট

আমাদের সাইটি ভিজিট করতে দয়া করে আপনার ব্রাউজারের এড ব্লক এক্টেনশনটি বন্ধ করুন।