ঈদের আগেই এস এসসি ও সমমান পরিক্ষার ফলাফল
অনলাইন ডেস্ক
ঈদের আগেই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল 2020 প্রত্যাশীদের খুশির সংবাদ জানাতে চায় শিক্ষা প্রশাসন। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের একটি রীতি চালু হয়েছে। এ রীতি অনুযায়ী বিগত ১০ বছর জেএসসি ও সমমান, এসএসসি ও সমমান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের রীতির এবার ব্যত্যয় ঘটছে।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকার সারাদেশে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে। এ কারণে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র শিক্ষকরা মূল্যায়ন শেষ করে নম্বরপত্র (ওএমআর শিট) বোর্ডে পৌঁছাতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় ওএমআর শিট পরীক্ষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ডগুলো। ওএমআর শিট সংগ্রহ শেষ হলে এগুলো স্ক্যান করে কম্পিউটারাইজড ডেটা তৈরির মাধ্যমে ফল তৈরি সম্পন্ন করা হবে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গতকাল বুধবার বিকালে জানান, পরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে বোর্ডগুলোকে। বিকল্প হিসেবে পোস্ট অফিসের মাধ্যমেই এ উত্তরপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। ১০ মের মধ্যে সব উত্তরপত্র বোর্ডে জমা হলে বোর্ডের কাজ দুই শিফটে করা হবে। প্রস্তুতি নিচ্ছি ঈদের আগেই ফল প্রকাশের।
এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল ছালাম গতকাল বুধবার বিকালে জানান, কয়েকটি জেলা থেকে বোর্ডের গাড়ি পাঠিয়ে পরীক্ষকদের কাছ থেকে ওএমআর শিট নিয়ে এসেছেন। হাতিয়ার দুর্গম এলাকা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় স্পিডবোটের মাধ্যমে উপকূলে নিয়ে এসেছেন। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে সব পরীক্ষকের কাছ থেকে ওএমআর শিট নেওয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, সরকারি ডাক ব্যবহার করে ওএমআর শিট সংগ্রহ করতে গেলে দেরি হয়ে যাবে। আমি বোর্ডের গাড়ি পাঠিয়ে পরীক্ষকদের কাছ থেকে ওএমআর শিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। বোর্ডের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছেন দিনরাত কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা।
যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. মোল্লা আমীর হোসেন জানান, তারাও স্বউদ্যোগে জেলা পর্যায়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে ওএমআর শিট সংগ্রহ শেষ করেছেন। এখন বোর্ডের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় ফল তৈরি করছেন। আশা করছেন, সব বোর্ডের আগেই তার বোর্ডের ফল প্রস্তুত হবে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. গাজী হাসান কামাল জানান, এসএসসির ফল প্রকাশের প্রায় ৯০ ভাগ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। এ বোর্ড থেকে এবার প্রথম ব্যাচ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস জানান, সব পরীক্ষকের কাছ থেকে ওএমআর শিট সংগ্রহ শেষ করেছেন। এখন বোর্ডের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় ফল তৈরির কাজ করছেন। ৯০ শতাংশ কাজ শেষ, বাকি কাজ করতে বেশি সময় লাগবে না।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামাল আহমেদ জানান, ফল প্রায় প্রস্তুত আমরা। কয়েকটি ধাপের কিছু কাজ এখন করা হচ্ছে, এটা সম্পন্ন করতে ৫ থেকে ৭ কর্মদিবস লাগবে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ৮ থেকে ১০ কর্মদিবসে পূর্ণ ফল প্রস্তুত করা যাবে।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদ জানান, সারাদেশ থেকে ফলের ওএমআর শিট বোর্ডে পাঠানোর জন্য সরকারি ডাক ব্যবহার করছেন। ডাক বিভাগকে বলা হয়েছে, ওএমআর শিট থাকলে এগুলো দ্রুত বোর্ডে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তারাও সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। পরীক্ষকরা ৮টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে ওএমআর শিট জমা দেবেন। অঞ্চল থেকে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়, জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় অফিস হয়ে শিক্ষা বোর্ডে পৌঁছবে এসব ওএমআর শিট। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পর বোর্ড ফল প্রস্তুত করার জন্য চার শিফট করে ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে।
মাদ্রাসা বোর্ডের মতোই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের ওএমআর শিট সংগ্রহের জন্য। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোরাদ হোসেন মোল্লা জানিয়েছেন, এগুলো বোর্ডে এনে ফল প্রস্তুত করতে বেশি সময় লাগবে না।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ফল প্রকাশ করা হয়েছিল ৬ মে। পরীক্ষা শুরু হয় ১ ফেব্রুয়ারি। এবার ফল প্রাকাশের সম্ভাব্য দিন ৯ মে ২০২০। এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩ ফেব্রুয়ারি।
আমদের ইউটিউব ফলাফল তথ্য
করোনায় ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা
দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি মে মাস পর্যন্ত বাড়ছে!
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার যেমন হবে
লকডাউন চলাকালীন অনলাইন ক্লাস ও লকডাউন শেষে একের পর এক পরীক্ষা : উপাচার্য